ক্রেতারা বেশি চালাক নাকি বিক্রেতারা বেশি চালাক?

আজকে আমি সত্যিকারের একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সেটা হচ্ছে যে, আমরা বেশি চালাক। আমরা বলতে এখানে যারা ক্রেতা তাঁদেরকে বোঝাচ্ছি। আমি একজন ক্রেতা হিসেবে এই কথাগুলো বলছি। আপনার মনেও প্রশ্ন থাকতে পারে যে ক্রেতারা বেশি চালাক না বিক্রেতারা বেশি চালাক

Hypnotic-Poison-পারফিউম

আমি ডি. সি. সি মার্কেটের একটা দোকানে Hypnotic Poison এই পারফিউমটি দেখেছিলাম যেটার সঠিক মূল্য আমি তখন ঠিক জানতাম না। এরপর আমি সেখান থেকে চলে আসি এবং অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পারি যে, Hypnotic Poison এর মূল্য ১০০০০ টাকা বা এর চাইতে একটু বেশি। আমি আলমাস সুপার শপ এও যাই, ইনফিনিটিতেও যাই এবং অন্যান্য যেসকল স্টোর আছে যারা এইসকল পারফিউমগুলো বিক্রি করে সেগুলোতেও পরে দেখেছি। তো এইসকল জায়গায় গিয়ে আমি এর পারফিউমটির মূল্য সংগ্রহ করি এবং জানতে পারি যে ১০০০০ টাকার মধ্যেই পারফিউমটি পাওয়া যায়। গুলশান ডি. সি. সি মার্কেটে যখন আমি পারফিউমটি দেখেছিলাম তখন আমি পারফিউমটার বক্স এবং আরও অন্যান্য জিনিস লক্ষ্য করেছিলাম কিন্তু আমি তখন এর মূল্য জিজ্ঞেস করি নি বা আমি জিজ্ঞেস করি নি যে, পারফিউমটার গন্ধ কতক্ষন থাকবে বা এটা অরিজিনাল কিনা?

পরেরবার যখন অন্য আরেকটা কাজে ডি. সি. সি মার্কেটে যাওয়া হল তখন হঠাত করেই আমার ওই পারফিউমটার কথা মনে পড়ল। তাছাড়া ওই দোকান থেকে আমি আমার বাচ্চার জন্য ডায়পার কিনেছিলাম। তো সেইসময় আমার চোখ পড়ল তাদের শেলফে, এবং সেই সময় আমি Hypnotic Poison এই পারফিউমটির বক্স দেখতে পেলাম। এরপর আমি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম

“আচ্ছা আপনাদের এখানে এই পারফিউমটার মূল্য কত?” আমি আশা করেছিলাম যে, হয়ত ৮-৯ হাজার টাকার মত বলবে কিন্তু বিক্রেতা আমাকে বলল ৩৫০০ টাকা। এটা শুনে আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম কারন অন্যান্য জায়গায় একই পারফিউম, একই বক্স, একই cellophane টাইপ রাখা ১০০০০ টাকা চাচ্ছে আর এখানে চাচ্ছে ৩৫০০ টাকা। এরপর আমি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম যে এটা অরিজিনাল কিনা? সে আমাকে বলল “হ্যা! এটা ১০০% অরিজিনাল, আমাদের এই মার্কেটে কোন নকল মাল চলে না, এই মার্কেটে নকল মাল রাখা যায় না”।

আমি অনেকের কাছ থেকে গুলশান ডি. সি. সি মার্কেটের অনেক সুনাম শুনেছি, এখান থেকে আমি আমার বাচ্চার জন্য বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র, ডায়পার কিনে থাকি, তাই আমার এই মার্কেট এর উপর একটা বিশ্বাস ছিল। আমি ভাবলাম দোকানদার হয়ত সত্যিকার মূল্য জানে না। আমি মনে মনে খুব খুশি হয়ে গেলাম যে, ১০০০০ টাকার একটা পারফিউম মাত্র ৩৫০০ টাকা চাচ্ছে এবং আমার এখানে দর কষাকষির সুযোগ আছে, দেখি আরেকটু কমাতে পারি কিনা! এরপরে আমি দোকানদারকে বললাম “আচ্ছা এই পারফিউমটাতো বাইরে বিক্রি করে আরেকটু বেশি দামে, আপনারা এত কমে বিক্রি করছেন কিভাবে?” পরে আমাকে উনি বলল, উনি পারফিউমটির আসল দামটা জানে না কেননা উনাকে উনার এক বন্ধু এই পারফিউমটি উপহার দিয়েছিল আর উনি সাধারণত পারফিউম ব্যবহার করে না তাই এটা এমনিই দোকানে রেখে দিয়েছে শুধু দেখানোর জন্য, যদি কোন কাস্টমার এই পারফিউমটি নিতে চায়! আর যেহেতু এটা গিফটের জিনিস তাই তার কাছে এটার কোন মূল্য নেই বা সে জানেও না বাইরে এই পারফিউমটি কত করে বিক্রি করে। এখানে বলে রাখা ভাল যে Hypnotic Poison এর এই একটা পারফিউমই ওইখানে ছিল কিন্তু সাথে অন্যান্য পারফিউমও ছিল। আমি ওই মুহূর্তে আর লোভ সামলাতে পারলাম না কারন একটা পারফিউমের দাম আমি প্রায় ৩০০% কমে পাচ্ছি তো কেন আমি কিনব না! এবং যখন আমি শুনলাম যে তার বন্ধু তাকে এটা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে এবং সে সঠিক দামটা জানে না তখন আমি বুঝলাম যে, হ্যাঁ ওকে বোকা বানানো আমার জন্য সহজ হবে।

আমি তখন তাকে বললাম যে, ঠিক আছে আপনি ৩৫০০ টাকা চাচ্ছেন কিন্তু আমি আপনাকে ২০০০ টাকা দিব। পরে সে বলল, “আরে না না ২০০০ টাকায় হয় নাকি! এখানে দাম এত আপডাউন করে না! আপনি ঘুরে দেখেন, অন্যান্য জায়গায় দাম দেখে আসেন তারপর আমাকে দাম দেন”। সে এই ধরনের কথাবার্তা শুরু করার পরে আমি অনেক দামাদামি করার পরে ২৫০০ টাকায় সে রাজি হল। আমি তো খুশিতে নাচতে নাচতে পারফিউমটা নিয়ে সাথে সাথে বাইক চালিয়ে ডি. সি. সি মার্কেট থেকে বের হলাম।

এর পরে আমি ডি. সি. সি মার্কেটের অপর পাশেই থাকা আলমাস সুপার শপে গেলাম এবং বললাম যে আপনাদের কাছে Hypnotic Poison পারফিউমটা আছে কিনা। তাদের কাছে তখন ওই পারফিউমটা ছিল না, কিন্তু আগে যখন খোঁজ করেছিলাম তখন ছিল, হয়তবা শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমার ঠিক পুরোপুরি মনে নেই কেননা এটা ঠিক ৮-৯ মাস আগের কথা। এরপরে আমি আমার ব্যাগ থেকে পারফিউমটা বের করে দেখালাম এবং বললাম যে এই পারফিউমটার দাম আপনাদের এখানে কত? তারপর তারা বলল যে, “এটা তো ১০-১১ হাজার টাকার মতই হবে”। আমি কিন্তু জানতাম যে এটার দাম এমনই কেননা তারা আমার কাছে এর আগেও এই একই দাম চেয়েছিল। তারপরও আমি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আবার একই কথা জিজ্ঞেস করলাম। তারপরে আমি পারফিউমটার বক্সটাও দেখালাম এবং বললাম যে, দেখেন তো এটাকে কি অরিজিনাল নাকি নকল মনে হয়? তখন আলমাসের লোকটাও দেখে বলল যে “না দেখে তো অরিজিনালই মনে হচ্ছে, তো আপনি কত দিয়ে কেনেছেন?” আমি বললাম যে “কিনেছি আপনাদের এখান থেকে আরও কমে কিনেছি”। তো সব মিলিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট হলাম এই ভেবে যে, আলমাসের একজন স্টোরকিপার আমাকে বলল যে এটা দেখতে তো অরিজিনালই মনে হচ্ছে। সুতরাং আমার কি আরও নিশ্চিত হওয়ার দরকার ছিল? আমি তখনও জানতাম না কিভাবে অরিজিনাল আর নকল পারফিউম চেনা যায়, এমনকি আমি Hypnotic Poison এই পারফিউমের গন্ধটাও কোনদিন পরীক্ষা করে দেখি নি, আমি আগে কখনই এটা ব্যবহার করি নি। এবং আমি খুব বেশি চিন্তা করিনি এই পারফিউমটার ঘ্রান কিরকম হবে।

আমি যখন বাসায় এসে সবাইকে বললাম, তখন সবাই একটু সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখল। একজন তো বলেই ফেলল “তোকে নকল মাল ধরায়ে দিসে”। এরপরে আমি খুবই দ্বিধায় পড়ে গেলাম। এরপরে বক্সের ভিতর থেকে যখন আমি পারফিউমটা বের করলাম তখন আমি খুবই আশাহত হয়ে গেলাম কেননা Dior এর “D” লেখাটা একটু উঠে গিয়েছিল এবং আমি যখন বোতলের কাভারটা খুললাম তখন দেখতে পেলাম এটা খুবই আলগাভাবে লাগানো ছিল। এরপরে আমি এই পারফিউমটা ২-১ দিন ব্যবহার করলাম। আমার জানা ছিল যে Dior এর পারফিউমগুলোর গন্ধ অনেকক্ষন থাকে কেননা আমার মামা Dior এর পারফিউম ব্যবহার করত, সেটা আমি অন্য আরেকটি ঘটনায় বলব

যাই হোক, আমি জানতাম যে Dior এর পারফিউমগুলোর গন্ধ অনেকক্ষন থাকে, একদিন তো কমপক্ষে থাকে, আবার অনেকের কাছে শুনি কাপড় না ধোয়ার আগ পর্যন্ত থাকে। আমার এই ইউনিসেক্স (পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য) পারফিউমটা ব্যবহার করার পরে দেখলাম ২ ঘন্টা পরে আর বোঝায়ই যায় না, ঘ্রান থাকে না। এরপরে আমার একটু সন্দেহ হল এবং আমি অনলাইনে একটু এটার রিভিউ খুঁজে দেখলাম। Amazon.com, Amazon.co.uk তে এই পারফিউমের রিভিউ পড়ে দেখলাম। অনেকেই বলল ভাল আবার অনেকেই বলছে না এর গন্ধ একদমই থাকে না, ২ ঘন্টার মত থাকে কারন এটা হচ্ছে অনেক আগের প্রোডাক্ট। আমার একটা ধারনা হল – পারফিউমটা হচ্ছে অনেক আগের একটা পারফিউম, এটা অরিজিনালই কিন্তু অনেক আগের প্রোডাক্ট এজন্যই হয়ত ঘ্রানটা ওই রকম থাকে না।

যাইহোক, এরও ৩-৪ মাস পরে কেন জানি আমার পারফিউম সংগ্রহ করার একটা শখ হয়ে গেল এবং এই সম্পর্কে আমি আরও পড়াশোনা শুরু করলাম যে কিভাবে এবং কোথা থেকে অরিজিনাল পারফিউম কেনা যায় বা বাংলাদেশের কে কে অরিজিনাল পারফিউম বিক্রি করে তারপর পারফিউম সম্পর্কে কোথা থেকে ভাল রিভিউ জানা যায়।

তো এইগুলা করতে করতে একদিন আমি ইউটিউবে একটা ভিডিও খুঁজে পেলাম যেটা ছিল কিভাবে অরিজিনাল পারফিউম এবং নকল পারফিউম চেনা যায়, তার উপর। যখন আমি ভিডিওটা দেখলাম, আমি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লাম এবং ওই ভিডিওতে যা যা বলেছে সেটার সাথে আমার পারফিউমটা মিলিয়ে দেখলাম। এবং এর পরেই আমি চিনতে পারলাম যে আমার পারফিউমটা ১০০% নকল, এটা অরিজিনাল পারফিউম না, কারন ওই ভিডিওতে যা যা বলছে তা মিলিয়ে দেখার পরে আমি খুবই হতাশ হলাম এই ভেবে যে, আমাকে তারা একটা ৫০০-৬০০ টাকার রেপ্লিকা ধরিয়ে দিয়েছে। আমি পরে আপনাদের সাথে কিভাবে অরিজিনাল এবং নকল পারফিউম চিনতে পারবেন তার একটি ভিডিও শেয়ার করব

এর পর থেকে আমি আর ওই দোকানের ত্রিসীমানার কাছেও যাই নি, আমার বাবুর কোন জিনিসও আমি আর ওখান থেকে কিনি নি। আমার মনের ভেতর একটা দৃঢ় সন্দেহ ঢুকে গেল যে গুলশান ডি. সি. সি মার্কেটে সব নকল পারফিউমে ভরা। ওই একটা দোকান থেকে কেনার পরে আমার আর পরে সাহস হয় নি সেখান থেকে অন্য কোন পারফিউম কেনার। আর তখনই বুঝে গেলাম যে আসলে দোকানদাররাই বুদ্ধিমান আর ক্রেতারাই তাদের বুদ্ধির জালে আটকা পড়ে আর গাধার মত কাজ করে। আমি গাধার মত কাজ করেছি এই কথা স্বীকার করতে আমার কোন সমস্যা নেই, কারন আমি লোভে পড়ে গিয়েছিলাম যখন শুনলাম যে ১০০০০ টাকার পারফিউমের দাম মাত্র ২৫০০ টাকা এবং দোকানদার এই পারফিউমের আসল দাম জানে না কারন এটা একটা উপহার ছিল তার জন্য। এই ধরনের বানোয়াট, সুন্দর, মনগড়া কাহিনী দোকানদাররা খুব সহজেই চালিয়ে দিতে পারে কারন তাদের এই প্রফেশনে তারা এটা অনেকদিন ধরেই করছে। কিভাবে তারা আপনাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নকল মালটা ধরিয়ে দিয়ে কিভাবে অনেক লাভ খেতে পারবে তারা সেটা ভালভাবেই জানে। এবং ওরা কাস্টমারকে খুব সহজেই বুঝতে পারে। আপনি হয়ত ওয়ান টাইম কাস্টমার বা আপনি কোন পারফিউমপ্রেমি না বা আপনি পারফিউম সম্পর্কে ওইরকম জ্ঞান রাখেন না, তো আপনাকে টার্গেট করেই তারা ওইসকল নকল পারফিউম বিক্রি করার চেষ্টা করবে ওরা যদি আপনার সম্পর্কে বুঝতে পারে যে আপনি পারফিউম সম্পর্কে ভাল জানেন তাহলে তারা আপনার কাছে কখনই সেটা বিক্রি করতে চাইবে না বা আপনি যখন জিজ্ঞেস করবেন যে এটা ১০০% অরিজিনাল কিনা অথবা আপনি যদি চ্যালেঞ্জ করেন যে আমি বক্স খুলে নিব যদি পারফিউম অরিজিনাল না হয় তাহলে আমি টাকা দিব না তাহলে সেক্ষেত্রে তারা অস্বীকৃতি জানাবে। ওরা মূলত টার্গেট করে কারা কারা পারফিউম কেনে না তাদেরকে। যাদের পারফিউম সম্পর্কে আইডিয়া নাই বা বুঝে না তাদের কথাবার্তা শুনলেই তারা বুঝে যায় এবং এইসব মনগড়া কাহিনী তৈরী করে সেই পারফিউম ভুলিয়ে ভালিয়ে বিক্রি করে দেয়।

এই সত্যিকারের ঘটনাটি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, আশা করি আপনারা এতে উপকৃত হবেন। দোকানদাররা যদি পারফিউমের দাম অনেক কম চায় অন্যান্য স্টোরের তুলনায় তাহলে বুঝতে হবে ওখানে নিশ্চয়ই কোন সমস্যা আছে। দয়া করে কোন মনগড়া কাহিনীতে আপনারা সায় দিবেন না, আর আপনারা ওইভাবে পারফিউম কিনবেন না। তো যাইহোক, আজকে এই পর্যন্তই। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই টিপসগুলো ভাল লেগেছে।

ও গুরুত্বপূর্ণ কথাটা বলতেই ভুলে গেছি। এই ঘটনাই আমাদের উদবুদ্ধ করেছে বাংলাদেশের মাটিতে ১০০% অরিজিনাল পারফিউম নিয়ে আসার জন্য। আমরা (Buyperfumeinbangladesh.com) নিজেরাই এখন UK, USA আর Dubai থেকে অরিজিনাল দোকান থেকে ১০০% অরিজিনাল পারফিউম আপনাদের জন্য নিয়ে আসছি। আমরা ১০০% অরিজিনাল পারফিউম বিক্রি করছি। আমাদের প্রোডাক্ট যদি কেউ নকল প্রমান করতে পারে তাহলে তাঁকে কোন টাকা দিতে হবে নাChristian Dior এর যে collection আমাদের কাছে এখন আছে তা আপনারা এই লিঙ্ক এ যেয়ে দেখতে পারেনঃ https://buyperfumeinbangladesh.com/perfume-brand/christian-dior/

যেকোনো পারফিউম এর ব্যপারে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আমাদের কল করতে পারেন এই নাম্বার এঃ ০১৫১১৬৬৪৪২২

blank

About 

Buyperfumeinbangladesh.com, বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ওয়েবসাইট যারা নামি দামি ব্র্যান্ডের পারফিউম এর অনেক বড় সংগ্রহ নিয়ে অনলাইন এ যাত্রা শুরু করে। আমাদের সকল পারফিউম ১০০% অরিজিনাল এবং ব্র্যান্ডের পারফিউম। আমরা কোন নকল বা রেপ্লিকা পারফিউম বিক্রি করি না।

  • facebook
  • pinterest
  • twitter
  • youtube

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Open chat
Need help?
Send Whatsapp
Hello, if you need any queries, we are here to help!